হস্তিনাপুর আখ্যান-২ঃ দ্রৌপদী

(edited)

হস্তিনাপুর আখ্যান-১ঃ উপসর্গ
মহাভারতের সবচেয়ে প্রভাবশালী মেয়ে চরিত্র।
পাঞ্চাল রাজের কন্যা বলে অনেকে ডাকে পাঞ্চালী, বাবা আদর করে ডাকতেন কৃষ্ণা আর ইতিহাসে পরিচিত দ্রৌপদী হিসাবে।
দ্রৌপদীর কথা বলতে গেলেই কাট্ট করে যে দুটো চিত্র যেকোনো মানুষের মাথায় প্রথমেই উঁকি দেয় তা হলো-

  • পঞ্চ পান্ডবের স্ত্রী এবং
  • হস্তিনাপুরের রাজসভায় বস্ত্রহরণ।

এই দুটো প্রসঙ্গেই আটকে আছে দ্রৌপদী অধিকাংশ মানুষের কাছে।

যেটা আগেই বলেছি, মহাভারত এত বিশাল এক উপাখ্যান আর এত শত চরিত্রের সমাহার যে সেখানে কোনো চরিত্রকেই ওভাবে পূর্ণাঙ্গভাবে বিকশিত হতে দেখা যায়না।
মাহমুদকে সেই সূক্ষ্ম কিন্তু বিস্তৃত এই ব্যাপার নিয়ে লিখতে দেখে আমি প্রচন্ড আনন্দিত।
মহাভারতের এ পর্যন্ত দ্রৌপদী, রাধেয় অর্থাৎ কর্ণ আর শকুনিকে নিয়ে আলাদাভাবে ৩টি বই লিখেছে মাহমুদ।

মহাভারতের এত শত শত চরিত্রের মধ্যে এবং বিশেষত অমন দুর্ধর্ষ, ক্ষুরধার পৌরুষ্য কুলের মাঝে প্রথম সারিতেই কেন্দ্রীয় চরিত্রে দ্রৌপদী জায়গা করে নিয়েছে।
স্বভাবতই দ্রৌপদী স্বতন্ত্রভাবে উপস্থাপিত হবার দাবি রাখে।

বইঃ দ্রৌপদী
লেখকঃ মাহমুদুর রহমান
প্রকাশনীঃ নালন্দা

বই সারমর্মঃ

বইতে দেখা যাবে দ্রৌপদীর দৃষ্টিকোণ থেকে মহাভারতকে ব্যাখ্যা করতে।
তবে এখানে কথক থাকবে খ্যাতিমান কালিদাস।
এবং আরো চমকপ্রদ ব্যাপার যে কালদাস এই গল্পটা শোনাবেনও নবরত্নের সাথে মহারাজ বিক্রমাদিত্যের রাজ সভায়!
দ্রৌপদীর জন্ম থেকে শুরু করে হস্তিনাপুরের রাজসভার অপমান এবং শেষ হয় কুরুক্ষেত্রের মাঠে।
কালিদাস রাজসভায় দ্রৌপদীর হয়ে মহাভারতকে চিত্রায়িত করাত চেষ্টা করেছেন।
যেটা আসলেই বেশ অনেক নতুন ব্যাপারে আলোকপাত করার প্রচেষ্টা থাকে যেখানে ব্যসবেদের মহাভারতে এসব খুটিনাটি আলোতে আসেনি।

দ্রৌপদীকে যুগেযুগে বিভিন্ন আঙ্গিকে নারীত্বের প্রতিনিধি হিসাবে নানান রূপে চিত্রিত করা হয়েছে। কিন্তু দ্রৌপদী হিসাবে দ্রৌপদীকে সবিস্তারে কোথাও চিত্রায়িত তেমন করা হয়নি যতটা সে আদি নারীর কাতারে থেকে অধিকারে রাখে।
সে হিসাবে মাহমুদের কাজটা আমার ভারী পছন্দ হয়েছে।

সবথেকে বেশী চমৎকৃত হয়েছি আমি দ্রৌপদীকে "কৃষ্ণা" কিংবা "পাঞ্চালী" রূপে আবিষ্কার করে।

আমোদিত হয়েছি কৃষ্ণার কাছে পার্থ'র আবেদনে, অর্জুনের আড়ালে থাকা পার্থ'র কাছে কৃষ্ণার আরাধনায়।
এমন আহামরি কোনো প্রেম দেখানো হয়নি। কিন্তু সুবিশাল মহাভারত উপাখ্যানের আড়ালে, গাম্ভীর্য আর ভারত্বের বর্মের আড়ালে সূক্ষ্মভাবে কৃষ্ণ-পার্থ'র হৃদয়ের আবছা টানাপোড় বুকে সূক্ষ্ম তীরের মতন বিঁধেছে।
বিশেষত অর্জুন যখন ১২বছরের স্বেচ্ছানির্বাসনে যায় আর ১২বছর পর ফিরে আসা!
আহা! এক মুহূর্তের জন্য যেনো আমি নিজেই দ্রৌপদীর সত্ত্বা হয়ে মিশে গিয়েছিলাম।

যদিও গল্পটা মাহমুদই বলেছে, কিন্তু কালিদাসের ধাঁচে বর্ণনা করার ধরণই হোক বা কালিদাসের একেবারে মহারাজের রাজসভায় স্বয়ং নবরত্নের সামনে উপস্থাপনের কারণেই হোক, বইটি অনবদ্য আর সুখপাঠ্য ছিল সমগ্র সময়টাই।

photo_2022-08-23_22-03-30.jpg

বরিশালে বসেই আমি মাহমুদের প্রথম বই হিসাবে দ্রৌপদী পড়েছিলাম। বরিশাল যাবার আগে ঢাকায় বইমেলায় থেমে মাহমুদের ৩টি বই কিনেছিলাম।
তখন আমি জানতামওনা কীর্তনখোলায় স্বয়ং লেখকের নাড়িপোতা!
কি আমোদজনক কাকতাল!

0.00164601 BEE
2 comments

বাংলা ভাষাযে পৃথিবীর অন্যতম কঠিন ভাষা তা আপনার লেখা পরে বুঝতে পারলাম আপু 😬। ৭০% শব্দই মাথায় উপর দিয়ে গেছে৷ ক্ষমা করবেন বুজতে না পারার জন্য 😃

0E-8 BEE

ধুরমিয়া কি কও! 😂
এইটেত সাদারং। কঠিন ভাষার ব্যবহার আমি জানিনা। আমি প্রাঞ্জলতা ভক্ত

0E-8 BEE

আপনার সাধারণ আমার কাছে অসাধারণ 😃।

0E-8 BEE

You post has been manually curated by BDVoter Team! To know more about us join our Discord.


Delegate HIVE POWER to us & earn HIVE daily.

FOLLOW OUR HIVE AUTO CURATION TRAIL

0E-8 BEE